প্রকাশিত: ১:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২২
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা পারিবারিক সহিংসতা আইনের মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ পরোয়না জারি করেন।
এদিন আদালতে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল আল-আমিনের। কিন্তু হাজির হতে পারেননি তিনি। ফলে তার পক্ষে আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। অপরদিকে ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আল-আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ৬ অক্টোবর আদালতে উপস্থিত হন আসামি আল-আমিন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে লিখিত জবাব দাখিল করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ আগস্ট স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। তবে এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ পাননি বলে জানান স্ত্রী ইসরাত। সেই সঙ্গে ন্যায়বিচার কামনা করেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পান আল-আমিন।
এরও আগে আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। ওইদিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর আল আমিনকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
একসাথে বসবাসের অধিকার, মাসিক ভরনপোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবি করে এ মামলা করেন বাদী।
মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল-আমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজী ভার্সনে কেজিতে পড়ালেখা করছে। বেশ কিছুদিন যাবৎ আল-আমিন স্ত্রী ও সন্তানদের ভরনপোষণ প্রদান করেন না এবং খোঁজও না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন। যোগাযোগও করেন না।
আরও বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আল আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাথারী কিল ঘুষিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। সংসার করবে না বলে জানায়। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় যৌতুক আইনের একটি মামলাও হয়।
সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর আল-আমিন তার মায়ের মাধ্যমে জানান, ইসরাতের সাথে সংসার করবে না এবং সন্তানদের ভরনপোষণ দিবেন না। প্রয়োজনে বাসা থেকে বের করে দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দিবেন। পরকীয়ায় আসক্তের কারণে একাজ করেছে এবং একজন মহিলার সাথে উঠানো ছবি ইসরাতে কাছে পাঠায়।
মামলায় বলা হয়, আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর যাবৎ আসামি বাদীর খোঁজখবর নেয় না এবং বাসায় নিয়মিত থাকে না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরনপোষণ দাবি করে মামলাটি দায়ের করলেন। জীবন ধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরনপোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়াবাবদ ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় বলা হয়।
উল্লেখ্য, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে গত ১ সেপ্টেম্বর আল আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান আরেকটি মামলা করেন। সে মামলায় গত ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ কওে আগাম জামিন পান আল আমিন।